উপন্যাস – জারজ, লেখক – তৈমুর খান, প্রকাশক – বার্ণিক প্রকাশন
প্রথমে লেখকের ব্যাপারে একটু বলি। তৈমুর খান আসলে একজন কবি। খুবই পরিচিত একজন কবি, বিশেষত লিটল ম্যাগাজিন মহলে। ২০১৮ সালে একটা সাহিত্য সম্মেলনে ওঁর ভাষণ শুনে আমি ওঁর ভক্ত হয়ে পড়ি। এমন সোজাভাবে স্পষ্ট সত্যি কথা বলতে আমি খুব কম লোককেই শুনেছি। কবিতার ব্যাপারে আমার জ্ঞান খুবই কম, তবে যখন ওঁর এই বই সম্পর্কে খবর পেলাম তখন খুব আগ্রহী হয়ে বইটা নিলাম, এবং আমি নিরাশ হইনি।
উপন্যাসটি (উপন্যাস না বলে এটিকে উপন্যাসিকা বলাই ঠিক হবে, কারণ ব্যাপ্তির দিক থেকে এটি খুবই ছোটো) প্রথম প্রকাশিত হয় ‘কাশফুল’ পত্রিকায়। পরে বার্ণিক প্রকাশন এটিকে গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করে। যার নায়ক হল এক জারজ সন্তান। যে তার জীবন-যুদ্ধে ক্রমাগত লড়াই করে চলার পর, এক চরম পর্যায়ে এসে তার জীবন সম্পর্কে এই গোপন সত্যটা আবিষ্কার করে। আর তার পর থেকেই পাল্টে যায় তার দুনিয়া দেখার নজর। তবে জারজ বলে তার দুঃখ নেই, তার দুঃখের কারণ হল – সে একা। সারাজীবন ভালো থাকার স্বপ্ন দেখে ও পাপ কাজ করার পর, তার ভালো মনটা অবশেষে তাকে দিয়ে করিয়ে নেয় এক বৈপ্লবিক কাজ। গল্প পড়ার সময় আমার অনেক বারই মনে হয়েছে – যেন গল্প নয়, কবিতা পড়ছি। অশ্লীলতা – আদিম রিপু, যা কবি পুরো গল্পে সুন্দরভাবে ফুটিয়েছেন তার কাব্য-রস দিয়ে। এত স্পষ্টভাবে নোংরামোকে দেখানো হয়েছে যে মনে হয় তা যেন ছদ্মবেশী সভ্য সমাজের গালে সজোরে থাপ্পড়।